খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলার বিভিন্ন জুমে এবার ধানের সাথে সাথী ফসলের বাম্পার ফলন হয়েছে। উঁচু-নিচু সবুজ পাহাড়ের বুক চিরে ধানের সাথে চাষ করা এসব সাথী ফসলের মধ্যে রয়েছে মিষ্টি কুমড়া, ঢেঁড়স, মরিচ, ভুট্টা, বেগুন, কাকন চাউল, কালো তিল, সাদা তিল, সিনরা ও মামরা। তাছাড়া বাঁশের নির্মিত মাচার ওপর ঝুলে আছে শশা, চিচিঙ্গা ও জিঙা। তবে মামরার ফলন বিগত বছরগুলোর তুলনায় অনেক অনেকগুণ বেশি বলে জানালেন জুমচাষিরা। মামরা মূলত শসা জাতীয় গোত্রের। দেখতে শসার মতো হলেও শসার চাইতে একটু খাট আকৃতির। এটাকে চাকমারা মামরা, ত্রিপুরায় দরমাই, মারমারা নুপ্রুসি নামেই চেনে। তবে মজার বিষয় হলো জুমের মাটিতে একি গর্তে ধানের বীজের সাথে সাথী ফসলের বীজ মিশ্রিত করে বপন করা হয়।

এই বীজ থেকেই ধানের সাথে সাথী ফসলগুলো বের হয়। এর মাঝে জুম মরিচের যেমন চাহিদা, তেমনি ঝাল, দামেও আগুন। তবে সাইজে অনেক ছোট। পাহাড়িদের কাছে জুম মরিচ বেশি জনপ্রিয়। সবসময় এর ছড়ার দাম নূন্যতম দু’শত টাকার ওপরে। জুমচাষি মরাটিলা পাইয়ং পাড়ার নিপুন ত্রিপুরা, বলী পাড়ার সন্তোষ ত্রিপুরা এবার বাম্পার ফলনের কথা জানান। তারা দুজনে প্রায় ছয় একর জায়গায় চাষ করে বাম্পার ফলন তুলেছেন। মরাটিলা এলাকার বাদশা কুমার কার্বারী জানান, এলাকার বেশিরভাগ মানুষ জুম চাষের ওপর নির্ভরশীল। চাষিদের পরিশ্রমের ফল হিসেবে বিগত বছরগুলোর তুলনায় এবারের ফলন বাম্পার বলে জানালেন। পানছড়ির উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা অরুনাংকর চাকমা জানান, জুমে কী পরিমাণ জায়গায় চাষ করা হয় তার কোনো হিসাব নেই। তবে জুমের ফসল সম্পুর্ণ বিষমুক্ত। এখানে কোনো কীটনাশক ব্যবহার করা হয় না। এবার বাম্পার ফলন হয়েছে বলে তিনিও জানান।